টিপস ও ট্রিক্স

ওয়েবসাইট তৈরি করার আগে যে বিষয়গুলো মাথায় রাখা উচিৎ।

0

ওয়েবসাইট তৈরি করার উদ্যেশ্যঃ
– সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ছাড়া কোন কাজেই সফল হওয়া যায় না, ওয়েবসাইটও তার ব্যাতিক্রম নয়। সবার আগে বুঝতে হবে, কেন আপনার সাইট দরকার?
পরিচিতি? পন্য বিক্রয়? বিজ্ঞাপন থেকে আয়? নাকি জাস্ট ফর্মালিটি? 
কি কি পারপাস সলভ হতে হবে সাইট থেকে সেগুলো আগে নোট ডাউন করে নিন।

ওয়েবসাইটের নাম কি হবে?
– এখানে নাম বলতে ডোমেইন নেইম। bdnews এই নাম খালি পাওয়া না গেলে নেয়া যায় bdnews24 অথবা news24bd তবে মনে রাখতে হবে, সাইটের নাম বেশী কমপ্লেক্স করা যাবে না যেটি ভিজিটরের মনে রাখা কস্টসাধ্য। 

ডোমেইন এক্সটেনশন সিলেক্টঃ
– আমাদের দেশে একটি ট্রেন্ড প্রচলিত আছে যে ওয়েবসাইট মানেই ডট কম। অন্য আরো যে কিছু এক্সটেনশন আছে, সেগুলো মানুষ জানেও না, জানলেও মানতে চায় না।
com = কমার্শিয়াল বা বানিজ্যিক সাইট। যেটি সরাসরি ব্যাবসার সাথে সমপৃক্ত। এখন, আমি যদি একটি সাইট খুলি যেখানে দরিদ্রদের হেল্প করা হবে। yourdomain.com নিয়ে নিলাম। এটা ভুল। এখানে নিতে হবে yourdomain.org কারন এটি একটি অলাভজনক সংস্থ্যা।
.org = অর্গানাইজেশন বা সংস্থ্যা
.edu = শিক্ষা প্রতিস্ঠান
.info = তথ্যবহুল সাইট। ব্লগ হতে পারে। টেলিফোন ডিরেক্টরি হতে পারে৷ যেখান থেকে তথ্য সংগ্রহ করা যাবে। 

প্লাটফর্ম সিলেক্টঃ
ওয়েবসাইট এর অনেক ধরন রয়েছে। প্রত্যেকটির আলাদা আলাদা সুবিধা অসুবিধা রয়েছে। আপনার উদ্যেশ্য, বাজেট, চাহিদা সব কিছুর সমন্বয় করেই বেছে নিতে হবে যে, কোন প্লাটফর্মটি আপনার জন্য বেস্ট!
অনেকেই আছে, প্রাইস কমের পেছনে দৌড়ান। নিশাত ২০ হাজার বলেছে, রহিম ১৫ বলেছে। রহিমের কাছেই কাজটা দিই। কাজ কমপ্লিট করে বুঝে নিয়ে খুশীতে লাফাচ্ছেন যে, ৫ হাজার টাকা সেইভ হয়েছে। 
অথচ আপনি জানতেও পারলেন না যে, ১৫ হাজার দিয়ে যে সারভিস আপনি রহিম থেকে নিয়েছেন, সেটি নিশাত ১২ হাজার টাকা দিয়ে দিতে পারতো! 
মনে রাখবেন, 
ওয়েবসাইট কোন চিপ্স/বিস্কুট নয় যে, যেই দোকান থেকেই নেন। সেইম প্রোডাক্ট পাবেন। মুলামুলি করে ১০ টাকার টা ৯ টাকাতে পেলে ১ টাকা লাভ।
এটা আমের মত। কোনটি ফরমালিনযুক্ত, কোনটি মুক্ত। পচা বাসি সবই আছে বাজারে। 
খেয়ে হজম করে তৃপ্তির ঢেকুর তুলে ফেলার পরেও বুঝতে পারবেন না কি খেলেন। 

ডিজাইন চয়েজঃ 
আপনি যে ক্যাটাগরির সাইট বানাবেন, সেই ক্যাটাগরির আরো কমপক্ষে ১০/২০ টি ওয়েবসাইট দেখবেন ভিজিট করে যে এই টাইপের সাইটগুলো কেমন হয়। কি কি ফিচার থাকে৷ কি কি আপনার দরকার। কোন সাইটকে স্পেসিফিকেলি ফলো করতে চাইলে সেটাও সিলেক্ট করতে পারেন।
এখানে এসেও প্রাইসিং ইস্যু করে। একদম লো বাজেটের ক্লায়েন্টের আমরা ডিজাইন চয়েজ করার অপশন দিই না। আমাদের পছন্দ মত একটি দিয়ে দিই। অথবা ২/৩ টা দেখাই৷ একটি চুজ করলে সেটিই হুবাহুব সেইম দিয়ে দিই। 
মাঝারি বাজেটের ক্লায়েন্টদের পছন্দমতো সাইট দেখে তার ৬০-৭০% কাছাকাছি মানের ডিজাইন প্রোভাইড করা হয়। 
আর হাই বাজেটের ক্লায়েন্টদের ইচ্ছামত ডিজাইন। ১০ টা সাইট এনে দিয়ে যদি বলা হয়, এটার মত হেডার! ওটার মত ম্যানু, এর মত স্লাইডার, ওর মত উইজেট সব দেয়া যায়। 
এখানে জিনিস যেটা ভালো, দাম তার একটু বেশীই। 

বাজেটঃ
অলরেডি বাজেট নিয়ে অনেক কথা বলে ফেলেছি আগের পয়েন্টগুলোতে৷ একই সাইট ১৫ হাজার টাকা দিয়েও করা সম্ভব এবং ১ লক্ষ টাকা দিয়েও সম্ভব৷ এমন না যে ১৫ হাজার টাকার টা খারাপ আর ১ লক্ষ টাকার টা ভালো। আপনার উদ্যেশ্য সলভ করার জন্য আনুমানিক কত বাজেট করলে সেটা পারফেক্টলি হবে, তার জন্য অবশ্যই স্পেশালিস্ট এর সাথে কনসাল্ট করে ডিসাইড করতে হবে। ১৫ হাজার টাকার মানের সাইট করে ১.৫ লক্ষ টাকা নিয়ে যাওয়ার মত ডেভেলপার যে দেশে নেই তা বলবো না৷ ভালো মন্দ সব পেশাতেই আছে৷ তাই যাচাই করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আর কোনভাবেই কোন প্রলোভনে কনভিন্সড হওয়া যাবে না। 
আমরা অনেক ক্ষেত্রেই শুধুমাত্র ওয়েবসাইট তৈরির জন্য বাজেট করি, মার্কেটিং এর জন্য করি না। সবচেয়ে বড়ভুল হচ্ছে এটা। মার্কেটিংই পারে খুব সাধারণ একটি সাইটকেও উপর লেভেলে তুলে নিতে। আপনি ১০ লক্ষ টাকা খরচ করে বিশাল বড় একটি প্রজেক্ট দাড় করালেন। কিন্তু প্রচারণা করলেন না। কেউ আপনার সাইটে আসলোও না, তাহলে পুরো বিনিয়োগইতো জলে গেলো!

ডেভেলপার চয়েজঃ
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টই হচ্ছে এটি। বিশ্বাস এখানে একটি বড় ফ্যাক্ট। যাকে তাকে বিলিভ করে বসলে ঠকতে হবে, আবার কাওকে বিলিভ না করলে কাজ করানোও সম্ভব না৷ এই ক্ষেত্রে ফ্রেশারদের একটু এড়িয়ে চলে অভিজ্ঞদের গুরুত্ব দেয়া উচিৎ। কারণ ফ্রেশার হয়তো তার নিজের এক্সপেরিয়েন্স গেদার করার জন্য কম প্রাইসে কাজ নিয়ে নেবে। পরে আপনি স্পেশাল কোন ফিচার চাইলে সে বানিয়েও দিতে পারবে না, প্রপার গাইডলাইনও পাবেন না। কোন প্রবলেম হলে সে ফিক্স করেও দিতে পারবে না অনে ক্ষেত্রে৷ এই বিষয়ে অভিজ্ঞ ডেভেলপার টাকা বেশি নিলেও তার উপর নিশ্চিন্তে নির্ভর করতে পারেন আপনি। আপনি কি কি সমস্যা ফেস করতে পারেন, তা সে আগে থেকেই জানে এবং সল্যুশন করে রাখবে। আপনি বুঝতেও পারবেন না যে এখানে আপনার সমস্যা হবার সম্ভাবনা ছিলো।

ট্রেনিং এবং ফিউচার সাপোর্টঃ
অনেক ক্ষেত্রেই ক্লায়েন্টরা ওয়েবসাইট বানিয়ে নেয়ার পর তা ঠিকভাবে মেইনটেইনেন্স করতে পারে না। পরে ডেভেলপারকে ব্লেইম দিয়ে থাকে। আর ডেভেলপারও যদি শুধু ডেভেলপমেন্ট এর টাকা নিয়ে থাকে তাহলে সে আজীবন বসে থেকে আপনাকে সাপোর্ট দিয়ে যাবে না৷ তাই আগে থেকেই কথা বলে নেয়া উচিত, মেইনটেইন এর জন্য তিনি কি আপনাকে সামনাসামনি প্রশিক্ষন দেবে নাকি ভিডিও অথবা লাইভ মিটিং করে। পরে সমস্যা হলে কতদিন ফ্রি সার্ভিস দেবে৷ তারপর কোন সেবা দরকার হলে কেমন পেমেন্ট আসতে পারে। আপডেট করতে গেলে খরচ কেমন হবে। মাসিক কিংবা বছরে ফি কেমন ইত্যাদি নিয়ে প্রয়োজনে চুক্তিপত্র করে রাখতে পারেন ।

যে কারনগুলোতে একটি ওয়েবসাইটের ডিজাইন ব্যর্থ হতে পারে।

Previous article

হুয়াওয়ের মার্কিন বিধিনিষেধ সম্পর্কে যে সব গুজব এবং এর বিপরীতে হুয়াওয়ের প্রতিক্রিয়া

Next article

You may also like

Comments

Leave a reply

Your email address will not be published.