ওয়েব ডিজাইনটেক দুনিয়া

কেন আপনার একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা দরকার?

0

বর্তমান সময়ে সব কিছুই অনেক আপডেট। এই ধারাবাহিকতায় আমরা প্রত্যেকেই চাই প্রযুক্তির সঠিক ব্যাবহার করে জীবনযাত্রার মান আরো সহজ ও সাবলীল করে তুলতে। সেটি আমরা করি ওয়েবসাইট, ফেসবুক অথবা এপের মাধ্যমে।
রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি, গাড়ি নেই। এপে (উবার, পাঠাও) অর্ডার করলাম। গাড়ি এসে পৌঁছে গেলে মুহূর্তেই। ঝড় বৃষ্টিতে গরম পিজা খেতে ইচ্ছা হচ্ছে। অর্ডার দিলাম (ফুডপান্ডা), বাসায় এসে গেলো। ইভেন বুয়া সার্ভিস এর জন্যেও এখন এপ আছে। সেদিন একটি এপে অর্ডার করে, একজন বুয়া এসে কাপড় ধুয়ে দিয়ে গেছে।


কি নেই তাহলে? এই ডিজিটালাইজেশন ব্যাবসাকেও একটি অন্য লেভেলে নিয়ে গেছে। 
এখানে একটি ঘটনা একটু ফ্ল্যাশব্যাক করি। পাঠাও/উবার আসার আগে সিএনজি চালকদের চেহারা আমাদের সবার মনে আছে। ১০০ টাকার ভাড়া ৫০০ টাকা চাওয়া ড্রাইভারে অভাব ছিলো না। তাদের কাছে জিম্মি ছিলো মানুষ। কিন্তু এখন সিএনজি থেকেও কম ভাড়া নিয়ে লাক্সারিয়াস কারে যাওয়া যায়। 
উবার/পাঠাও আসার পর সিএনজি (অটোরিক্সা) চালকরা এইসব এপ বন্ধের দাবীতে মানববন্ধন করেছে। তারপর তাদের ভুল তাদের ধরিয়ে দেয়ার পর বলেছে,
আমরা আর বেশী ভাড়া চাইবো না। আমাদের জন্যেও এপের ব্যাবস্থা করা হোক, ইত্যাদি ইত্যাদি!

এখন সব কিছুই যেহেতু ডিজিটাল, তার সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের ব্যাবসাকেও ডিজিটালাইজেশন করতে হবে। নাহলে সেই সিএনজি চালকদের মতই অবস্থা হবে। 
যেহেতু এখন পাবলিক সচেতন, তাই ১০ টাকার প্রোডাক্ট ২০ টাকা সেল করার ধান্দা ছেড়ে পারলে প্রফিট কম করে ১০ টাকার প্রোডাক্ট ৯.৭৫ টাকায় সেল করলে অনেক কাস্টমার পাওয়া যাবে। 

এবার আসি পলিসিতে। আমি আগের একটি পোস্টে বলেছিলাম যে, ওয়েবসাইট ছাড়াও শুধু ফেসবুক পেইজ দিয়ে বিজন্যাস করা যায়। তাহলে কেন ওয়েবসাইট? 

আবার একটু ট্রেডিশনাল বিজন্যাসের দিকে যাই। এক কাপ চায়ের দাম কত? ফুটপাতে ৫ টাকা, একটু আরামে রেস্টুরেন্টে বসে খেলে ২০ টাকা। প্রথমত মানের পার্থক্য। দ্বিতীয়ত, পরিবেশের পার্থক্য। নিরিবিলি পরিবেশে, মৃদু আলোয়, এসিতে বসে খাবেন, বিলতো একটু আসবেই।
এবার আসি সেই বহুল প্রচলিত এনার্জি বালবের কেইস স্টাডিতে। মার্কেট থেকে ২৫-৩০ ওয়াটের এনার্জি বাল্ব ১ বছরের ওয়ারেন্টি সহ (ফিলিপস বা নামি ব্র‍্যান্ডের) ৩০০-৩৫০ টাকা। আর ফুটপাথ থেকে ১০০ টাকা। 
তাহলে কেন তিনগুন দাম দিয়ে মানুষ দোকান থেকে কেনে?
উত্তর একটিই, “আস্থা”
দোকান থেকে কেনার পর খারাপ পড়লে আবার এসে সেই দোকানদারকে পাওয়া যাবে। আর যে ১০-১৫ লক্ষ টাকা ইনভেস্টমেন্ট করে বসেছে সে ৩০০ টাকার জন্য প্রতারণা করার সম্ভাবনা কম। 
অপরপক্ষে, যে ভ্যান গাড়িরে মাইকিং করে সেল করছে, তাকে নাও পাওয়া যেতে পারে। যেমন, যারা মেমোরি কার্ড সেল করে টেপ বাজিয়ে। তাদের কথাগুলো খেয়াল করুন,
“১৬ জিবি মেমোরি কার্ড ২০০ টাকা, ৩২ জিবি মেমোরি কার্ড ৩০০ টাকা। জায়গায় দাঁড়িয়ে চেক করে নেবেন”
শেষ লাইন শুনলে মনে হবে সে তার প্রোডাক্টের ব্যাপারে খুব কনফিডেন্ট যে তার পন্য ভালো। জায়গায় দাঁড়িয়ে প্রমান। আসল ঘটনা তা না। ঘটনা হচ্ছে কেনার ৫ মিনিট পরেও কোন সমস্যা হলে সেটা তার দায়িত্ব না। 

এতো কিছু বলার উদ্যেশ্য হল পাবলিকের আস্থার জায়গাটা বোঝানো। আমি বলছি না যে, ফুটপাথের পন্য খারাপ, শোরুমের পন্য ভালো। 
বরং অনেক সময় স্ট্রিট শপ থেকে বেছে ভালো পন্য পাওয়া যায়, আবার শোরুমের প্রোডাক্টেও ঘাপলা থাকে। 
আবার অনেক স্ট্রিট শপার রাস্তায় বসে লক্ষ টাকার সেল নিয়ে আসে। কিন্তু শোরুমে বসে মাছি মারে।
তাই, কোন এক্সাম্পলই শিরোধার্য নয়!

এবার আসি ওয়েবের কেইসে৷ একটি পেইজ (স্ট্রিট শপ) ফ্রিতে যে কেউই খুলে নিতে পারে। কিন্তু একটি ওয়েবসাইট (শো রুম) যে বেশ ভালো পরিমাণ ইনভেস্ট করে তৈরি করেছে, তার উপর আস্থাটা একটু বেশী আসে। 
ওয়েবসাইটে সকল তথ্য খুব বিস্তারিত ভাবে থাকে, সাজানো গোছানো। 
ক্লায়েন্ট খুব সহজেই তার পছন্দমত পন্য অর্ডার করা এবং তার প্রয়োজনমত সকল তথ্যই সংগ্রহ করতে পারে। 
ওয়েবসাইটে মার্কেটিং, অফার, প্রমোশন সংক্রান্ত অনেক অনেক ফিচার ব্যাবহার করা সম্ভব, যেগুলো শুধুমাত্র ওয়েবসাইটেই সম্ভব, পেইজে কোনভাবেই না। 
বিজন্যাস শুরু করার জন্য প্রথমেই ইনভেস্টমেন্ট না করে পেইজ দিয়ে শুরু করা যায়, তবে কিছুদিন পরে হলেও ওয়েবসাইট খুলে নেয়ার টার্গেট থাকতে হবে। প্রতিযোগিতার এই বাজারে সামান্য লিমিটেশনও আপনাকে পিছিয়ে নিয়ে যেতে পারে অনেক গুন। 

পেইজ দিয়ে শুরু করতে গেলে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখবেন। যে নামে আপনার ব্র‍্যান্ডিং করছেন, সেই নামে অলরেডি কোন ওয়েবসাইট আছে কি না। যদি না থাকে, তার শুধু ডোমেইন নেইম টা কিনে রেখে দিন। বছরে মাত্র ১০০০ টাকার মত খরচের বিনিময়ে এই নামটি আপনার নামে রেজিস্টার হয়ে থাকলো। ৬ মাস বা ১ বছর পর আপনি যখন ওয়েবসাইট করার কথা ভাববেন, তখন এই নামটি সহজেই ইউজ করতে পারবেন। আপনার ব্যান্ডিং নেইম আর কেউ নিয়ে নিতে পারবে না। 

অনলাইন আসলে অনেক বিশাল জগৎ। এখানে টিকে থাকতে হলে প্রতিনিয়ত শেখার মানসিকতা থাকতে হবে। আর স্কিল ডেভেলপমেন্টে সবচেয়ে বেশী ইফোর্ট দিতে হবে।

কিভাবে একটি ই-কমার্স সাইট দিয়ে ব্যবসা শুরু করবেন?

Next article

You may also like

Comments

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *