টিপস ও ট্রিক্স

কিভাবে প্রফেশনাল সিভি লিখবেন?

0

রিজিউম (Resume) কি? 
ব্যাক্তিগত, শিক্ষাগত এবং প্রফেশনাল লাইফের সংক্ষিপ্ত বিবরণ। আমি আবার বলছি, “সংক্ষিপ্ত” বিবরণ। এটি সাধারণত ১ পেইজের হয়ে থাকে, রেয়ারলি ২ পেইজ। জব পারপাসে ইউজ করা হয়।

সিভি (CV) কি? 
ব্যাক্তিগত, শিক্ষাগত এবং প্রফেশনাল লাইফের বিস্তারিত বিবরণ। আমি আবার বলছি, “বিস্তারিত” বিবরণ। এটি ৫/১০ পেইজ হতে পারে। এটিতে বিভিন্ন ডকুমেন্টস সনদ ইত্যাদির ফটোকপিও এটাচ থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে এটাচমেন্ট একটি সেকশন করে উল্লেখ করে দিতে হবে আপনি কি কি এটাচ করেছেন। জব পারপাসে ইউজ করা হয়।

বায়োডাটা (Bio Data) কি?
সিভির সকল তথ্য থাকার পর এতে বাবা, মা, ভাই, বোন, রিলেটিভস সহ সকলের ডিটেলস উল্লেখ থাকে। হাইট, ওয়েট, এমনকি স্মোকিং হ্যাবিট আছে কি না তাও বায়োডাটাতে উল্লেখ থাকে। সর্বোপরি যত বেশী ব্যাখ্যা করা যায়। বাংলাদেশে সাধারণত বিয়ের পারপাসে ইউজ করা হয়। এছাড়াও ব্যাবসায়িক চুক্তি বা এরকম ক্ষেত্রে ব্যাবহার হয়ে থাকতে পারে।

উপরের ৩ টি পড়ে নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন যে এই ৩ টির পার্থক্য কি! আমাদের দেশে অনেকেই এই বিষয় না জেনে কমন ভুল করে বসে। লিখে “Resume of Mr. X” ভেতরে দিয়ে রাখে সিভির মত ব্যাখ্যা। অথরিটি চাইলে এই সামান্য বিষয় না ও ধরতে পারে। কিন্তু, ধরলেও কিছু করার নেই। 

সিভিতে কি কি থাকতে হবে, তা নিয়ে আমি কিছুই বলবো না। কারন এসব সকলেই জানে। যা অধিকাংশই জানেন না, সেসব নিয়ে হাল্কা ব্রিফিং দেয়ার চেস্টা করছি। 

কোথায় সিভি এবং কোথায় রিজিউম?
ইন্টারন্যাশনালি অনেক হিউম্যান রিসোর্স এক্সপার্টরা বলে থাকেন যে, প্রাইভেট সেক্টরে এপ্লাই করার জন্য রিজিউম ইউজ করতে এবং গভট ক্ষেত্রে সিভি ইউজ করতে। (কারন প্রাইভেট ফার্ম এর এতো সময় নেই আপনার ডিটেলস পড়ার। তাদের ওভারভিউ দেখে ভালো লাগলে ইন্টারভিউতে ডাকবে। আর সরকারি ক্ষেত্রে নিয়োগ সেসব দেশে খুব গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়। তাই সিভি প্রেফারেবল)
এখানে, আমার ব্যাক্তিগত মতামত হচ্ছে, আমাদের দেশে উলটা হওয়া উচিৎ (এই বিষয়ে যারা ভালো জানেন, কমেন্ট আশা করছি)। কারন, আমাদের দেশে প্রাইভেট সেক্টরেই বেশী গুরুত্ব দেয়া হয়। সরকারি ক্ষেত্রে…। এহেম এহেম!

রিজিউমের কয়েকটি ধরনঃ
১/ অভিজ্ঞতা গুরুত্ব দিয়েঃ কোন একটি সেক্টরে দীর্ঘদিন করে কাজ করে আসছেন, প্র্যাকটিক্যাল নলেজ ভালো। সেই ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা হাইলাইট করা যায়।


২/ দক্ষত গুরুত্ব দিয়েঃ আপনি ফ্রেশার, কিন্তু কাজের দক্ষতা ভালো। অভিজ্ঞতা কম/নেই। কিন্তু সুযোগ পেলে ভালো কিছু করে দেখানোর প্রচন্ড স্পৃহা আছে। সেই ক্ষেত্রে দক্ষতা হাইলাইট করবেন।


৩/ অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতার সমন্বয়ঃ আমার মত যেসব লোকজন মাঝারী ধরনের। অভিজ্ঞতাও আছে মোটামুটি, দক্ষতাও উল্লেখযোগ্য। সেরকম ক্ষেত্রে এটিই পারফেক্ট। এবং এটিই বেস্ট অপশন যে কোন এমপ্লয়ারের জন্য।


রিজিউমে যা যা থাকা উচিৎ, এবং যে অনুযায়ী সাজানো উচিৎ:
১/ নাম, ঠিকানা (বর্তমান), মোবাইল, মেইল, পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট (যদি থাকে) 
২/ সামারি (নিজের সম্পর্কে অল্প কথায় কয়েক লাইন। অবশ্যই পেশাগত, ব্যাক্তিগত নয়)। সামারের আগে টাইটেল ব্যাবহার করা যায়, যেটি আপনার পেশাগত পরিচয় বহন করে।
৩/ অভিজ্ঞতা
৪/ দক্ষতা
৫/ শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং প্রশিক্ষণ
[এখানে উলেক্ষ্য যে, ৩ এবং ৪ নাম্বার পয়েন্ট উপরে উল্লেখিত “রিজিউমের কয়েকটি ধরন” অনুযায়ী আগে/পরে হবে]


যা যা করা উচিৎ নয়ঃ
১/ আনপ্রফেশনাল ইমেইল এড্রেসঃ coolboy143@yahoo.com এমন মেইল ইউজ করলে প্রাথমিক ইমপ্রেশনেই বাদ পড়ে যাবেন। মেইল এড্রেসে নিজের নাম ইউজ করতে হবে। যেমন, kazimahmud94@gmail.com
২/ রিজিউমের ক্ষেত্রে এভয়েড করবেন, জন্ম সাল, বৈবাহিক অবস্থা, জাতীয়তা, ধর্ম এসব। সিভির ক্ষেত্রে অল রাইট।
৩/ ইউএসএ, ইউকে এসব জায়গায় এপ্লাই করার সময় ছবি ব্যাবহার করবেন না। বাংলাদেশে ছবিকে গুরুত্ব দেয়া হয়, বাইরে নয়। 
৪/ সোশ্যাল প্রোফাইল (ফেসবুক, লিংকডইন) শেয়ার করতে পারেন। কিন্তু, আধারে আততায়ী, নিশীথিনি রাজকন্য এসব নাম কখনোই না, স্রেফ নিজের নাম। 
৫/ বিডিজবস ছাড়া অন্য কোথাও এক্সপেক্টেড স্যালারী উল্লেখ করবেন না

সিভি ডিজাইনঃ
সাদামাটা অরডিনারি সিভি তো যে কোন কম্পিউটার দোকান থেকেই কম্পোজ করে নেয়া যায়। আপনার সিভি যদি একটু ডিফারেন্ট টাইপ ডিজাইন করা হয়, তাহলে কেমন হয়? এমপ্লয়ার সবগুলো সিভি হাতে নেয়ার পর আপনারটি হাতে নিয়ে যেন পড়ার আগ্রহ পায়। সিভি ডিজাইনে আপনার পেশার ছাপ থাকলে ভালো। গ্রাফিক্স ডিজাইনারের সিভি সামান্য গ্রাফিক্যালি মোডিফাইড হতে পারে, ওয়েব ডিজাইনারের সিভিতে ছোট পয়েন্টগুলো সাইডে উইজেট আকারে আসতে পারে। অনলাইনে আপনার পেশার নাম দিয়ে সার্চ করতে পারেন। যেমন, Accountant CV Design । এটা অবশ্য ডিপেন্ড করছে কোথায় সাবমিট করছেন তার উপর। লো ক্লাস কোথাও এই ডিজাইন প্রফেশনাল হিসেবে নাও কাউন্ট করতে পারে। নিজে না পারলে প্রফেশনাল সিভি ডিজাইনার আছে অনেকেই সামান্য অর্থের বিনিময়ে ডিজাইন করে দিয়ে থাকে। তারপরেও খরচ করতে না চাইলে অনলাইনে বিভিন্ন স্টাইলিশ সিভি মেকার পাওয়া যায়, যাদের সাইটে রেজিস্ট্রেশন করে ফর্ম পুরন করে আপনার সকল তথ্য ইনপুট করবেন। অটোমেটিক তাদের ফরম্যাটে সাজানো হয়ে যাবে। জাস্ট পিডিএফ আকারে ডাউনলোড করে নেবেন। তবে খেয়াল রাখবেন, তাদের ওয়েবসাইটের ব্র্যান্ডিং ওয়াটারমার্ক যেন না মেরে দেয়। 

কাস্টমার এবং কনজ্যুমার কি?

Previous article

যে কারনগুলোতে একটি ওয়েবসাইটের ডিজাইন ব্যর্থ হতে পারে।

Next article

You may also like

Comments

Leave a reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *