ডেইলি লাইফ

স্মার্টনেস কি ও কিভাবে স্মার্ট হয়ে উঠবেন?

0
smart lifestyle

আমাদের অনেকগুলো গুণের মধ্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি গুন হচ্ছে স্মার্টনেস।
আমরা প্রায়ই বলে থাকি যে, সে খুব স্মার্ট! তুমি একটু স্মার্ট হতে পারো না? আমি আরেকটু স্মার্ট হলে বোধহয় সে আমাকে পছন্দ করতো ইত্যাদি। 
অনেকেই আবার এই স্মার্ট হওয়ার চেস্টায় এমন অনেও কিছু করে বসি যেটি কি না অন্যদের কাছে হাস্যকর হয়ে ওঠে।

অনেকেই অনেক বিষয়ে তথ্যবহুল টিউটোরিয়াল লিখে। কিন্তু এই বিষয় নিয়ে লেখা কমই রয়েছে। তাই আমার মনে হল যে এটি নিয়ে লেখা উচিৎ…. 

প্রথমেই জানতে হবে স্মার্টনেস কি?
– আমাদের দেশে অধিকাংশই স্মার্টনেস বলতে বোঝায় বাহ্যিক পোশাক পরিচ্ছদ ইত্যাদি। ওমুককে দেখেছি সেই গেটাপ নিয়ে এসেছে। বেশ স্মার্ট লাগছে দেখতে ইত্যাদি।
আসলে কিন্তু লুক কাওকেই স্মার্ট করতে পারে না। বড়জোর হ্যান্ডসাম করতে পারে। স্মার্ট হতে হবে চিন্তায়, কথায়, আচার আচরনে। এবং অবশ্যই পোশাক পরিচ্ছদেও….

অনেক দেশেই একটা কথার প্রচলন আছে, an smart people must have three virtues. He can speak English, can operate computer and can drive a car….
এখান থেকেও আমরা পোশাকে সীমাবদ্ধ না থাকার ব্যাপারটা ধারণা পাই।

এবার সরাসরি আসল কথায়। কিভাবে স্মার্ট হতে হবে? আমি কি স্মার্ট? আরো কি হওয়া উচিৎ? 


১/ পোশাকঃ আমাদের পোশাক হতে হবে শালীন এবং পরিবেশের সাথে সামঞ্জস্যপুর্ন অফিসে যেমন টিশার্ট পরে গেলে বেমানান, ঠিক একই ভাবে গফের সাথে ডেটে গেলে টাই পরে যাওয়াটা বেমানান। আবার ধরুন, সামাজিক একটি আচার অনুসঠানে আপনি খুব মাঞ্জা মেরে কোট পরে গেলেন। গরমে হাসফাস করছেন। পাশেই একজন একটা পাতলা টি-শার্ট পরে রিল্যাক্সে বসে আছে। মোট কথা আমাদের ড্রেস চয়েজ এমন হওয়া উচিৎ যে, your dress needs to make you feel comfortable। যে পরিবেশে স্যান্ডেল কমফোর্টেবল, সেখানে সেটাই পারফেক্ট।

ছবিঃ সাটারস্টোক


২/ কথাবার্তাঃ আমাদের অনেকেরই কথায় একটা আঞ্চলিকতার টান আছে। যেহেতু আমাদের প্রত্যেকের শিকড় গ্রাম থেকে শুরু, তাই আমাদের মাটি, আমাদের সংস্ক্রিতি আমাদের নিজস্বতাকে ছোট করে দেখার কোন সুযোগ নেই। কিন্তু পরিবেশভেদে সেটিতে চেঞ্জ নিয়ে আসতে হবে। টপ ক্লাসে কথা বলার এবং লো ক্লাসে কথা বলার জন্যেও ফিট হতে হবে। বাংলা বললে শুদ্ধ বাংলা অথবা ইংরেজি বললে শুদ্ধ ইংরেজি বলতে হবে। উটভট মিক্সিং করে হ য ব র ল করা যাবে না…
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে দ্রুত কথা বলা পরিহার করতে হবে। দ্রুত কথা বললে চিন্তার সময় পাওয়া যায় কম। এতে বেফাশ কথা এবং ভুল জায়গায় ভুল কথা বলার সম্ভাবনা বেশী থাকে।


৩/ স্থিরতাঃ আমাদের প্রায়ই দেখা যায় কিছু এটিচিউড বিশেষ করে ইয়াং জেনারেশনের মধ্যে। ধরুন একজন এক জায়গায় গিয়ে বসে আছে, সে খুব অদ্ভুত ভাবে চারিদিকে তাকাচ্ছে, যেন তার বডি ল্যাংগুয়েজ বলে দিচ্ছে, এ কোথায় এসে পড়লাম রে বাবা! অথবা টেবিলের উপর থেকে একটা কিছু নিয়ে নাড়াচাড়া করা ইত্যাদি। স্থিরভাবে থাকার হ্যাবিটস থাকতে হবে। 


৪/ সেন্স অফ হিউমারঃ এটি আসলেই একটি জটিল টপিক৷ কারণ এটি ঠিক কোন স্কেলে থাকা উচিৎ তা বোঝা মুশকিল। কম হলেও প্রবলেম, বেশী হলেও প্রবলেম। ধরুন, আপনার সাথে কেউ মজা করে (লিমিটের মধ্যে) কিছু একটা বললো আর আপনি রিয়েক্ট করে বসলেন, এটি যেমন আপনাকে একটি বিরক্তিকর চরিত্র হিসেবে প্রেজেন্ট করবে। তেমনি যে জায়গায় যে মজা করা উচিৎ নয় সেটি করলেও আপনার ভাড়ামোই প্রকাশ পাবে।


৫/ জ্ঞান বাড়ানোঃ আমাদের একটি বড় প্রবলেম হচ্ছে আমরা প্রত্যেকেই মনে করি যে, আমরা অনেক কিছু জানি। ইউটিউব দেখে, পত্রিকা পড়ে দুনিয়ার কোথায় কি হচ্ছে সব খবর রাখি৷ আমার থেকে আর কে বেশী জানে? এই ধারনাটাই আমাদের জানার রাস্তাগুলো সংকুচিত করে নিয়ে আসে। তাই প্রতিনিয়ত শেখার মানসিকতা থাকতে হবে। বই পড়া, আশেপাশে অবজারভ করে সব কিছু থেকেই জানতে হবে।


৬/ ব্যাক্তিত্বের বিকাশঃ কোন মানুষটার পারসোনালিটি কেমন? আমরা প্রায়ই দেখি একটি আড্ডায় বা আলোচনায় এক-দুইজন মানুষ থাকে, যারা কথা বললে অন্য সবাই খুব আগ্রহ সহকারে শোনে এবং গুরুত্ব দেয়। আবার এমনও দুয়েকজন থাকে যাদের কথা কেউ শোনেও না। আর শুনলেও গুরুত্ব দেয় না। এই পার্থক্য কেন? আসলে যারা যুক্তিসংগত এবং তথ্যবহুল কথা বলে, যা বলে ভেবেচিন্তে বলে তাদের কথা সচরাচর সমাদৃত হয়। তাদের উপর আশেপাশের মানুষের আস্থা ওই লেভেলে গিয়ে ঠেকে যে, তারা ভুল বললেও সবাই সেটিকে ঠিক হিসেবে ধরে নেয়…
………
আমাদের প্রত্যেকের বদলানো উচিত। মানুষ নামক প্রাণীটির অভিযোজন ক্ষমতা বেশ ভালো বলেই সে আসলে খাপ খাইয়ে নিতে পারে সব কিছুতেই। আপনি পারছেন তো?

আমেরিকান কোম্পানী ছাড়া কি স্মার্টফোন বানাতে পারবে হুয়াওয়ে?

Previous article

বিশ্বের সবচেয়ে দামি ডোমেইন নেম !

Next article

You may also like

Comments

Leave a reply

Your email address will not be published.