যদি আপনি মনে করে থাকেন ৫জি শুধু দ্রুত ডাউনলোড আর ডাটা ট্রান্সফার করতে পারবে তাহলে সেটা আপনার ভুল ধারনা। ৫জি দ্রুত ডাউনলোডের পাশাপাশি খুব দ্রুত যোগাযোগ স্থাপন করতে পারবে।
৫জি দ্রুত ডাটা ট্রান্সফারের সাথে সাথে ইনস্ট্যান্ট সিন্ধান্ত নেওয়া ও রিয়েল-টাইম ক্লাউড ব্যবস্থারও অনেক পরিবর্তন নিয়ে আসবে।
চালকহীন গাড়ি, ড্রোন, ট্রেন ইত্যাদি ক্ষেত্রে ৫জি নিয়ে আসবে বিশাল পরিবর্তন। এইগুলা এই ৫জি দ্বারা খুব সহজে নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হবে। ইলেকট্রনিক্স ব্যবস্থায় এটি নতুন যুগে নিয়ে যাবে যেখানে ওয়্যারেবলস, স্মার্ট ফেব্রিক্স সহ সব কিছু কানেক্ট করা সম্ভব । ইন্টারনেট অফ থিংস (IoT) ব্যবস্থায়ও এটি নিয়ে আসতে পারে যুগান্তোকারী পরিবর্তন। পুরো বিশ্ব অর্থনীতিতে ও ব্যবসাতে এটি রিয়েল-টাইম ইকোনমি ব্যবস্থা নিয়ে আসতে সক্ষম।
তবে এসব কিছুই রাতারাতি হবে না । ৫জি শহর এলাকাতে ছড়িয়ে পড়তে কয়েক বছর সময় লেগে যাবে। এছাড়া পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়তে অনেক সময়ের দরকার।
উন্নত মানের ভয়েস কলঃ
WhatsApp খুবি জনপ্রিয় মাধ্যম কথা বলার জন্য। এছাড়া ইমো, ভাইবার সহ অনেক ফ্রী মাধ্যম আছে কথা বলার জন্য। এইগুলো শুধু ফ্রী দেখেই জনপ্রিয় না। এদের ভয়েস কোয়ালিটি অনেক ভাল হওয়াও একটি কারন এইগুলোকে জনপ্রিয় করার।
WhatsApp এর মাধ্যমে ভয়েস কল-এবং স্কাইপ বা জুম-এর মতো যে কোন ভয়েস-ওভার-ইন্টারনেট-প্রোটোকল (ভিওআইপি) পরিষেবা অনেক ফোনের নেটওয়ার্কের তুলনায় অনেক বেশি পরিষ্কার । ভয়েস কোয়ালিটি 3G এবং 4G নেটওয়ার্কের ডিজাইনারদের জন্য খুব বেশি দরকারি ছিলো না, কিন্তু 5G সঙ্গে আপনি ভয়েস কল, ভিডিও কল ইত্যাদি অনেক ভালো কোয়ালিটির পাবেন এবং এটা নিয়ে ৫জিতে অনেক কাজ করা হয়েছে।
অধিক ধারণক্ষমতাঃ
5G এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ যদি এমএমটিসি (massive Machine Type Communications) নামে পরিচিত হয় । এর মাধ্যমে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে এক মিলিয়ন ডিভাইস সংযুক্ত করা যায় ।
এটার কাজ কি? ধরুন আপনি একটি স্টেডিয়ামে বসে আছেন। যেখানে ৫০,০০০ লোক একসাথে বসে আছে। এখন আপনি কাউকে ফোন করতে চাইলে আর করতে পারবেন না। কারন আপনি আপনার ফোনে নেটওয়ার্ক পাবেন না। কিন্তু ৫জি তে এই সমস্যাটি থাকবে না। এটি একসাথে অনেক ডিভাইস কানেক্ট করতে পারে। এছাড়া লাইভ অনুষ্ঠান স্ট্রিম করা যাবে এই ৫জি দিয়ে। যেটা মিডিয়া বা টিভি চ্যানেল গুলোকে আরো সহজে সার্ভিস দেওয়ার ক্ষেত্রে কাজে দিবে।
প্লাটুনিংঃ
৫জির একটি খুবি গুরত্বপূর্ণ কনফিগ হচ্ছে URLLC (Ultra-Reliable and Low Latency Communications)। URLLC এর সাহায্যে নেটওয়ার্ক ও ডিভাইস খুব নিরাপদে ও দ্রুততার সাথে কানেক্ট করা যায়।
এছাড়া চালকবিহীন গাড়ির রিয়েল-টাইম গতি নিয়ন্ত্রন ও একে অপরের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব। এর সাহায্যে হাইওয়ের ট্রাফিক ব্যবস্থা খুব সহজে নিয়ন্ত্রন করা যাবে।
মোবাইল ব্রডকাস্টিংঃ
আপনি ইতিমধ্যে ফেসবুকে VR 360-ডিগ্রী ভিডিও সম্প্রচার করতে পারেন, কিন্তু এর কোয়ালিটি খুবি বাজে। কিন্তু আপনি ৫জি দিয়ে এটি খুব ভালোভাবে করতে পারবেন।
ব্রেকিং নিউজ, লাইভ স্পোর্টস, এবং ইভেন্ট ইত্যাদি 4K থেকে 8K পর্যন্ত স্ট্রিম করা সম্ভব ৫জিতে।
5G’s উচ্চতর গতি এবং ক্ষেত্রবিশেষে কম ল্যাটেন্সি সুবিধা এই কাজ গুলো খুব ভাল ভাবে করার ক্ষেত্রে সাহায্য করছে।
আমরা আশা করি এই প্রযুক্তি আমাদের গ্রাহকদের আরো সক্ষমতা এনে দেবে অডিও, ভিডিও, মাল্টি ক্যামেরার প্রযোজনায় সিঙ্গেল পোর্টেবল ট্রান্সমিশন সলিউশন, ৪কে স্ট্রিমিং এবং উন্নতমানের ভিডিও রিটার্ন দেওয়ার ক্ষেত্রে।
বলেছেন, আভি চাহেন, চীফ অপারেশন অফিসার ও কো-ফাউন্ডার, লাইভইউ।
হিউম্যান হেলথঃ
৫জির ভালো দিকের পাশাপাশি এর কিছু খারাপ দিকও রয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো ৫জির মাধ্যমে মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে। ক্যান্সার সহ কয়েকটি রোগের কারন হতে পারে এই ৫জি। অনেক গুলো নেটয়ার্ক এর কারনে রেডিয়েশনের মাত্রা বাড়তে পারে।
পরিশেষে একটা কথায় বলতে হয়, ফাইভ জি (5G) ব্যবসা, বিশ্ব অর্থনীতি, যোগাযোগ ব্যবস্থায় অনেক পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে। যা আমাদের জীবনযাত্রাকে আমূল পরিবর্তন করে দিতে পারে।
Comments